স্পোর্টস ডেস্ক: ওভালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানের পরাজয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে। তাই তো সুনীল গাভাস্কারকে আক্ষেপ করতে হচ্ছে, এই দল নিয়ে এশিয়া কাপ জেতাও সম্ভব নয়। আসলে ভারতের বর্তমান মিডলঅর্ডার সেরা সময় পেরিয়ে এসেছে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারাদের সবাই এখন মধ্যত্রিশে। তাদের ক্যারিয়ারে ভাটার টান পড়ে গেছে। তাই এখনই দল পুনর্গঠন দরকার। না হলে সামনে আরও ভুগতে হবে।
গত বছর অ্যাডিলেডে টি২০ বিশ্বকাপের সেমিতে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা পুরো দায় চাপিয়েছিলেন বোলারদের ওপর। কিন্তু ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৬২ রান তুলে বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ করে দেওয়া ব্যাটারদের নিয়ে তিনি টু শব্দটি করেননি। অবশ্য করবেন কেমন করে! তাহলে যে তার নিজের ঘাড়েও দায় নিতে হবে। ওপেন করতে নেমে রোহিত ২৭ বল খেলে মাত্র ২৮ করে রানের গতি মন্থর করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে রেখেছিলেন। ইদানীং তো রোহিতের ব্যাট আরও বেশি অলস হয়ে গেছে। কালেভদ্রে বড় ইনিংসের দেখা মেলে। সেখানেও আগের মতো বিধ্বংসী চেহারায় দেখা যায় না তাকে।
মোদ্দাকথা, ৩৬ বছর বয়সী রোহিত শর্মা তার সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন। এই সংকট কাটাতে তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত করার কাজ নির্বাচকরা আরও আগেই শুরু করেছিলেন। যে কারণে গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে চেতেশ্বর পূজারা ও আজিঙ্কা রাহানেকে বাদ দিয়ে দুই তরুণ মিডলঅর্ডার শ্রেয়াস আইয়ার ও হনুমা বিহারিকে সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অভিজ্ঞ দু’জনকে আবার ফিরিয়ে আনা হলো। এটা আসলে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করাদের প্রতি একপ্রকার অবজ্ঞা।
যদিও তাদের দলে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাহুল দ্রাবিড় যুক্তি দেখিয়েছেন, ‘এই ছেলেরাই কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে জিতেছে। যদিও তারা স্বীকার করেছে, ফাইনালে নিজেদের সেরাটা তারা খেলতে পারেনি। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের জন্য খেলতে হয়।’
তবে কোচ যতই যুক্তি দেন না কেন, ভারতের মিডলঅর্ডার বেশ কিছুদিন ধরে ‘আইসিইউ’তে রয়েছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। দলের সবচেয়ে বড় তারকা বিরাট কোহলি ফাইনালে অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে ষষ্ঠ স্টাম্পের বলে খোঁচা দিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন। শুধু ফাইনালেই নয়, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ চক্রে তার গড় মাত্র ৩২.১৩। পূজারার গত এক বছরের গড় ৩২। ফাইনালে ভালো খেলার পরও রাহানের গড় ২৪.৬৪। এসব পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তারা নিজেদের সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন। অথচ অন্য দেশের মিডলঅর্ডারের তারকাদের গড় অনেক বেশি।